Foot Care

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ দেখায়?

Foot Care Products in Bangladesh

শীতে ত্বকের জন্য এমনিতেই দরকার হয় একটু বাড়তি যত্নের। কিন্তু শরীরের অন্যান্য অংশের যত্ন নেওয়ার প্রতি যতটা মনোযোগ দেওয়া হয় পায়ের যত্নের দিকে আসলে সেভাবে খেয়াল করা হয় না। অথচ পায়ের ওপরেই থাকে সারা শরীরের ভর। আর পা সুন্দর রাখতে গেলে শীতে পায়ের জন্য প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন। তা না হলে পায়ের ত্বক হয়ে পড়বে রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ। সাথে দেখা দিতে পারে পা ফাটার সমস্যা। শীত আসলেই পায়ের ত্বক নিষ্প্রাণ যেন না হয়, সেজন্য ফলো করতে হবে কিছু টিপস!

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ? 

পায়ের ত্বক ভালো রাখতে কিন্তু খুব কঠিন কিছু করার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন অল্প কিছু সময় ব্যয় করেই আপনি আপনার পায়ের ত্বক ভালো রাখতে পারেন। চলুন জেনে নিই পায়ের যত্নের সহজ কিছু পদ্ধতি।

১. ময়েশ্চারাইজড রাখুন

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ার কারণে বাতাসে ধুলো ময়লার পরিমাণ বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন বাইরে থেকে ফেরার পর অবশ্যই পা দুটো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর হালকা ভেজা থাকা অবস্থায় পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন, ক্রিম বা বডি অয়েল ব্যবহার করুন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য। প্রতিদিন গোসলের পরেও পায়ে ভেজা ভাব থাকা অবস্থাতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

২. রাতেও চাই বিশেষ যত্ন

রাতের বেলা পায়ের ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন ভালোভাবে লাগিয়ে তারপর সুতির মোজা পরে থাকতে পারেন। এতে পায়ের শুষ্কতা ও পা ফাটার সমস্যাও দূর হবে।

৩. অয়েল ম্যাসাজ করুন

পায়ের শুষ্কতার সমস্যা থেকে বাঁচতে পায়ে তেল ম্যাসাজ করা বেশ উপকারী। এক্ষেত্রে অলিভ অয়েল, তিলের তেল বা বাদাম তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ম্যাসাজের আগে তেল হালকা গরম করে নিতে পারেন। এতে যেমন ক্লান্তি দূর হয়ে পায়ের আরাম হবে, তেমন নিয়মিত অয়েল ম্যাসাজের কারণে পায়ের ত্বকও ভালো থাকবে। কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।

৪. ট্রাই করুন DIY টোটকা

পায়ের ত্বক খুব বেশি রুক্ষ হলে গোলাপজল ও গ্লিসারিনের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এতে কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল যোগ করে নিন। এতে শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যাবে না! বরং পায়ের ত্বক হবে কোমল ও মসৃণ।

৫. নিজেই করে নিন পেডিকিওর

সপ্তাহে একদিন পায়ের যত্নে একটু বাড়তি সময় ব্যয় করুন। কুসুম গরম পানিতে অল্প লবণ, এক চা চামচ বডি অয়েল বা অলিভ অয়েল, এক চা চামচ শ্যাম্পু বা শাওয়ার জেল মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর একটি পিউমিস স্টোন বা ঝামা পাথর দিয়ে পায়ের গোড়ালি ঘষে নিন, ভেজা গোড়ালি থেকে সহজেই পায়ের মৃত কোষ দূর হয়ে গোড়ালি মসৃণ হয়ে উঠবে। পায়ের ত্বকে কোনও স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। এরপর লাগিয়ে নিন কোনও ঘরোয়া প্যাক। যেমনঃ টমেটো ও মধুর প্যাক। এটি রোদে পোড়া ভাব দূর করে এবং ত্বককে করে তোলে কোমল ও মসৃণ। সবশেষে পা ভালোভাবে মুছে পায়ে লোশন বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

৬. জুতোর দিকেও খেয়াল রাখুন

পায়ের ত্বক সুন্দর রাখতে এবং পা ফাটা প্রতিরোধ করতে ঘরেও নরম জুতো বা স্যান্ডেল পরে থাকার অভ্যাস করুন। পাশাপাশি প্রতিদিনের ব্যবহারে ভালো মানের জুতো ব্যবহার করুন। ভালো মানের জুতো বা স্যান্ডেল পায়ের অনেক সমস্যা কমিয়ে দেয়।

৭. লোশন নির্বাচনে উপাদান দেখে নিন

শীতের সময় যতবার পায়ে পানি ব্যবহার করবেন ততবারই পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে শুষ্কতা অনেকটাই কমে যাবে। শীতকালে এমন ময়েশ্চারাইজার পায়ের ত্বকের জন্য বেছে নিন যাতে অয়েলের পরিমাণ বেশি থাকে। শিয়া বাটার, আর্গান অয়েল বা ভিটামিন ই আছে এমন লোশন আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতে পারে।

৮. পায়ের ত্বকের সান প্রোটেকশন জরুরি

পায়ের ত্বক শীতে আরো সুরক্ষিত রাখতে বাইরে গেলে পা ঢাকা জুতা পরতে পারেন। পা দুটোকে যতো বেশি শীত ও ধুলোবালি থেকে রক্ষা করা যাবে পা ততোই ভালো থাকবে। দিনের বেলায় খোলা স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পায়ের ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না।

শীত আসলেই পায়ের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়ার সমস্যা যারা ফেইস করেন, তারা আজ সল্যুশন পেয়ে গেলেন! ছোট ছোট এই কৌশলগুলো নিয়মিত মেনে চললে শীতে জুড়ে আপনার পায়ের ত্বক নিয়ে আপনাকে কোনও চিন্তাই করতে হবে না। ঘরোয়া যত্নের পাশাপাশি আরামদায়ক জুতোর ব্যবহার, পায়ের ত্বক নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার পা থাকবে কোমল ও মসৃণ। সাথে পা ফাটার সমস্যাও আর থাকবে না। আশা করি আজকের ফিচারটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিল। আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *